মহেশখালীতে
দুদকের ফাঁদে বিপুল অংকের ঘুষের টাকাসহ ভূমি অফিসের কানুনগো আটকা পড়ার পর
এবার ঘুষ বাণিজ্যের দুর্দমনীয় সিন্ডিকেটের হাল ধরেছে তহসিলদার জয়নাল।
দুদকের অভিযানের পর একের পর এক বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে মহেশখালী উপজেলা
ভূমি অফিস ও তহসিল অফিসগুলোর ঘুষ-দুর্নীতির নানা তথ্য। এ সব অফিসে পদে পদে
ঘুষ দেওয়া ছাড়া একটি ফাইলও নড়ে না। ভূমি অফিস ও তহসিল অফিস সংশ্লিষ্ট একটি
শক্তিশালী সিন্ডিকেট কক্সবাজারের এলএ অফিস পর্যন্ত বিস্তৃত বলে জানাযাচ্ছে।
কানুনগো আব্দুর রহমান গ্রেফতারের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে
বিভিন্ন তথ্য ছড়িয়ে পড়ছে। ভুক্তভোগীরা সাংবাদিকদের সাথে যোগাযোগ করে নানা
তথ্য দিয়ে যাচ্ছেন। গ্রেফতার হওয়া কানুনগোকে পুলিশ কর্তৃক আদালতের মাধ্যমে
জেল হাজতে পাঠানোর পর কক্সবাজার জেলখানায় রয়েছে। তাছাড়া উপজেলা প্রশাসন
থেকে প্রতিবেদন দেওয়ার পর গ্রেফতার হওয়া কানুনগোকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ
গ্রেফতারের ঘটনায় উপজেলা ভূমি অফিস খুশি বলে জানালেও মহেশখালীর ভূমি
সেক্টরের এ ঘুষ বাণিজ্যের সিন্ডিকেট এই কানুনগোকে বাঁচতে মোটা অংকের টাকা
নিয়ে মাঠে নেমেছে বলে সূত্রে প্রকাশ।
জানাগেছে -মহেশখালীতে একটি উপজেলা ভূমি অফিস ও তার আওতাধীন অপর পাঁচটি ইউনিয়ন তহসিল অফিস রয়েছে। এ অফিসগুলোতে কমর্রত বিভিন্ন লোকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই। মহেশখালীতে সরকারের একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পসহ বিভিন্ন কারণে অতি অল্প সময়ে এখানে জমির ক্রয়-বিক্রয়ের ঘটনা যেমন বেড়েছে ঠিক তেমনি বেড়েছে বিপুল হারে জমির দামও। তাছাড়া অধিগ্রহণের মূল্য ও ক্ষতিপূরণের টাকা পেতে ভূমি মালিকদেরকে জমি সংক্রান্ত কাগজপত্র নানা ভাবে হালনাগাদ করতে হচ্ছে। এ সব কারণে গত কয়েক বছরে মহেশখালীর জমি মালিকরা অধিক মাত্রায় উপজেলা ভূমি অফিস ও তহসিল অফিসমুখি হয়ে পড়েছে। আর এসব অফিসে নাগরিক সুবিধা নিতে গিয়েই নানা ঝক্কি ঝামেলার মধ্যে পড়তে হচ্ছে দ্বীপবাসীকে। এসব কাজ আদায় করতে মানুষজনকে বাধ্য হয়েই হয়তো দালালের শরণাপন্ন হতে হচ্ছে নয়তো সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মোটা অংকের টাকায় ঘুষ দিয়ে কাজ আদায় করতে হচ্ছে। সরকারি নিয়মমতো যে কাজ অল্প টাকার সরকারি রাজস্বের বিনিময়ে হওয়ার কথা তা করতে গোনতে হচ্ছে বহু বড় অংকের টাকা। অভিযোগ রয়েছে -কাজের জন্য এসব দালাল সিন্ডিকেটও গড়ে তুলেছে এ সব কর্মকর্তা। কর্মকতার্কে বড় অংকের ঘুষের টাকা দিয়ে বা দালালদের মাধ্যমে না গেলে এ সব অফিসে কোনও কাজই করতে পারে না সাধারণ লোকজন। একাধিক সূত্রের অভিযোগ থেকে জানাযায় -বিশেষত ভূমি অফিসের কানুনগো, সার্ভেয়ার ও ইউনিয়ন তহসিল অফিসগুলোর তহসিলদের নেতৃত্বে রয়েছে ঘুষ-দুর্নীতির একটি বিশাল সিন্ডিকেট। এ সিন্ডিকেটের সাথে যোগসূত্রতা রয়েছে জেলা এলএ অফিসের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের সাথে। উভয় সিন্ডিকেটের সমন্বয়ে মানুষকে অনেকটা জিম্মি করে হাতিয়ে নেওয়া হয় মোটা অংকের টাকা। অনেক ক্ষেত্রে এ দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেটের ফাঁদে পড়ে লোকজকে বড়ো অংকের ঘুষের বিনিময়ে কাজ আদায় করতে বাধ্য হতে হচ্ছে।
সূত্র জানায় -উপজেলার গোরকঘাটা, শাপলাপুর, হোয়ানক, কালারমার ছড়া ও মাতারবাড়িতে একটি করে ইউনিয়ন তহসিল অফিস রয়েছে। গোরকঘাটা অফিসের আওতায় পৌরসভা, কুতুবজোম ও ছোট মহেশখালী ও বড় মহেশখালী ইউনিয়ন, মাতারবাড়ি তহসিল অফিসের আওতায় মাতারবাড়ি ও ধলঘাটা ইউনিয়নের ভূমি সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট কাজ সম্পাদন করা হয়। মহেশখালী উপজেলা ভূমি অফিসসহ এ সব তহসিল অফিসের ভেতরে বাইরে নানা পরিচয়ে কাজ করে বহু লোকজন। মহেশখালীতে জমির গুরুত্ব বেড়ে যাওয়ার সুযোগে প্রতিমাসে এ সকল অফিসে কোটি টাকার ঘুষ বাণিজ্য হয় বলে সূত্রে প্রকাশ। দুদকের অভিযানের সময় কয়েক ঘণ্টার মধ্যে একমাত্র কানুনগোর ভা-ে বড়ো অংকের ঘুষের টাকা জমা হওয়াটাই তার বড়ো প্রমাণ বলে মনে করছেন অনেকেই।
এদিকে ঘুষের টাকাসহ কানুনগো গ্রেফতার হওয়ার পর ভুক্তভোগী মানুষের মধ্যে নানা ভাবে দ্রোহ ও ক্ষোভের প্রকাশ ঘটছে। অনেক ভুক্তভোগী জানাচ্ছেন এ তহসিলদার সিন্ডিকেটের প্রধান হচ্ছেন কালারমার ছড়ার তহসিলদার জয়নাল আবেদীন। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার বিষয়ে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য দিচ্ছেন। লোকজনকে জিম্মি করে ঘুষের টাকা আদায়ে তার জুড়ি নেই বলে জানাচ্ছেন কেউ কেউ। নিজেদের অফিসের ঘুষ দুর্নীতির বাইরেও তার কাছে আসা ফরিয়াদি লোকজনকে নানা ভাবে ফুসলিয়ে এলএ অফিসে চেকের টাকা উত্তোলনের জন্য দালালির কাজও ভাগিয়ে নিচ্ছেন তিনি। আর কক্সবাজার এলএ অফিসকেন্দ্রীক তার নেতৃত্বে রয়েছে আরও একটি দালাল সিন্ডিকেট। দুদকের হাতে গ্রেফতার হওয়া কানুনগো আব্দুর রহমানকে সাথে নিয়ে নিজেদের সরকারি চাকরির বিষয় ও মূল নাম-পরিচয় গোপন রেখে এলএ অফিসের টাকা উত্তোলনের জন্য একাধিক দলিল সম্পাদন করছে বলে তথ্য প্রমাণ পাওয়াগেছে। ওয়াকিবহাল মহল মনে করছেন এসব কাজে ঊর্ধ্বতন লোকজন জড়িত না থাকলে এসব জালিয়াতিমূলক কাজ করা সম্ভব হতো না। মহেশখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)ও বলছেন -তহসিলদার জয়নাল এর বিরুদ্ধে বিভিন্নজন প্রতিনিয়তই মৌখিক অভিযোগ করেন। তবে প্রমানযোগ্য কোনো অভিযোগ না থাকায় ব্যবস্থা নেওয়া যায় না অনেক সময়। তিনি জানান দুইটি খতিয়ানের বিষয়ে স্পষ্টত অভিযোগ পাওয়ার পর এ সব অভিযোগের ভিত্তিতে তিনি দুই গোপনে এ তহসিল অফিস পরিদর্শন করেছেন। শেষ পর্যন্ত এ সব অভিযোগ সত্যতা পাওয়া যায়নি -জানান এসিল্যান্ড।
মহেশখালী থানার অফিসার ইন-চার্জ(ওসি) প্রভাষ চন্দ্র ধর জানান -দুদকের ফাঁদ মামলায় গ্রেফতার হওয়া মহেশখালী ভূমি অফিসের কানুনগো আব্দুর রহমানকে মহেশখালী থানায় সোপর্দ করা হয়েছিল। পরে তাকে যথাযথ প্রক্রিয়ায় জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
এ সব বিষয়ে জানতে চাইলে মহেশখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অংগজাই মারমা জানান -প্রথম থেকেই এ অফিসের কানুনগো আবদুর রহমানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ছিল। বিভিন্ন সূত্র থেকে বার বার অভিযোগ পাওয়ার পর তাকে একাধিক দফায় সর্তক করা হয়েছিল। তিনি তা শোনেননি। দুদক তাকে গ্রেফতার করে খুব ভালো কাজ করেছে বলে মন্তব্য করে কানুনগোর গ্রেফতারে বেশ খুশি হয়েছেন বলে জানান সহকারী কমিশনার (ভূমি)। তিনি বলেন এ গ্রেফতারের ঘটনায় পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ভূমি অফিস থেকে গলিখিত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছিল। পরে এ পত্রের ভিত্তিতে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক তাকে চাকরি থেকে সমায়িক বরখাস্তের আদেশ দেন। তাহসিল অফিসসহ সংশ্লিষ্ট অফিসগুলো আরও তদারকি বড়ানো হবে বলেও জানান এসিল্যান্ড।
এদিকে তহসিলদার জয়নাল আবেদীন তার বিরুদ্ধে আসা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন ভূমি অফিসের কানুনগো আব্দুর রহমানের সাথে তার কখনও ভাল সম্পর্ক ছিলো না এবং এখনও নেই। কানুনগোকে বাঁচানোর জন্য তিনি সক্রিয় রয়েছেন বলা হচ্ছে এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও হয়রানীমূলক।
[ ২> ]
জানাগেছে -মহেশখালীতে একটি উপজেলা ভূমি অফিস ও তার আওতাধীন অপর পাঁচটি ইউনিয়ন তহসিল অফিস রয়েছে। এ অফিসগুলোতে কমর্রত বিভিন্ন লোকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই। মহেশখালীতে সরকারের একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পসহ বিভিন্ন কারণে অতি অল্প সময়ে এখানে জমির ক্রয়-বিক্রয়ের ঘটনা যেমন বেড়েছে ঠিক তেমনি বেড়েছে বিপুল হারে জমির দামও। তাছাড়া অধিগ্রহণের মূল্য ও ক্ষতিপূরণের টাকা পেতে ভূমি মালিকদেরকে জমি সংক্রান্ত কাগজপত্র নানা ভাবে হালনাগাদ করতে হচ্ছে। এ সব কারণে গত কয়েক বছরে মহেশখালীর জমি মালিকরা অধিক মাত্রায় উপজেলা ভূমি অফিস ও তহসিল অফিসমুখি হয়ে পড়েছে। আর এসব অফিসে নাগরিক সুবিধা নিতে গিয়েই নানা ঝক্কি ঝামেলার মধ্যে পড়তে হচ্ছে দ্বীপবাসীকে। এসব কাজ আদায় করতে মানুষজনকে বাধ্য হয়েই হয়তো দালালের শরণাপন্ন হতে হচ্ছে নয়তো সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মোটা অংকের টাকায় ঘুষ দিয়ে কাজ আদায় করতে হচ্ছে। সরকারি নিয়মমতো যে কাজ অল্প টাকার সরকারি রাজস্বের বিনিময়ে হওয়ার কথা তা করতে গোনতে হচ্ছে বহু বড় অংকের টাকা। অভিযোগ রয়েছে -কাজের জন্য এসব দালাল সিন্ডিকেটও গড়ে তুলেছে এ সব কর্মকর্তা। কর্মকতার্কে বড় অংকের ঘুষের টাকা দিয়ে বা দালালদের মাধ্যমে না গেলে এ সব অফিসে কোনও কাজই করতে পারে না সাধারণ লোকজন। একাধিক সূত্রের অভিযোগ থেকে জানাযায় -বিশেষত ভূমি অফিসের কানুনগো, সার্ভেয়ার ও ইউনিয়ন তহসিল অফিসগুলোর তহসিলদের নেতৃত্বে রয়েছে ঘুষ-দুর্নীতির একটি বিশাল সিন্ডিকেট। এ সিন্ডিকেটের সাথে যোগসূত্রতা রয়েছে জেলা এলএ অফিসের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের সাথে। উভয় সিন্ডিকেটের সমন্বয়ে মানুষকে অনেকটা জিম্মি করে হাতিয়ে নেওয়া হয় মোটা অংকের টাকা। অনেক ক্ষেত্রে এ দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেটের ফাঁদে পড়ে লোকজকে বড়ো অংকের ঘুষের বিনিময়ে কাজ আদায় করতে বাধ্য হতে হচ্ছে।
দুদকের হাতে ঘুষের টাকাসহ গ্রেফতার হওয়া কানুনগো আব্দুর রহমান |
হোয়ানক ও কালারমার ছড়ার তহসিলদার জয়নাল। |
মহেশখালী থানার অফিসার ইন-চার্জ(ওসি) প্রভাষ চন্দ্র ধর জানান -দুদকের ফাঁদ মামলায় গ্রেফতার হওয়া মহেশখালী ভূমি অফিসের কানুনগো আব্দুর রহমানকে মহেশখালী থানায় সোপর্দ করা হয়েছিল। পরে তাকে যথাযথ প্রক্রিয়ায় জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
এ সব বিষয়ে জানতে চাইলে মহেশখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অংগজাই মারমা জানান -প্রথম থেকেই এ অফিসের কানুনগো আবদুর রহমানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ছিল। বিভিন্ন সূত্র থেকে বার বার অভিযোগ পাওয়ার পর তাকে একাধিক দফায় সর্তক করা হয়েছিল। তিনি তা শোনেননি। দুদক তাকে গ্রেফতার করে খুব ভালো কাজ করেছে বলে মন্তব্য করে কানুনগোর গ্রেফতারে বেশ খুশি হয়েছেন বলে জানান সহকারী কমিশনার (ভূমি)। তিনি বলেন এ গ্রেফতারের ঘটনায় পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ভূমি অফিস থেকে গলিখিত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছিল। পরে এ পত্রের ভিত্তিতে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক তাকে চাকরি থেকে সমায়িক বরখাস্তের আদেশ দেন। তাহসিল অফিসসহ সংশ্লিষ্ট অফিসগুলো আরও তদারকি বড়ানো হবে বলেও জানান এসিল্যান্ড।
এদিকে তহসিলদার জয়নাল আবেদীন তার বিরুদ্ধে আসা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন ভূমি অফিসের কানুনগো আব্দুর রহমানের সাথে তার কখনও ভাল সম্পর্ক ছিলো না এবং এখনও নেই। কানুনগোকে বাঁচানোর জন্য তিনি সক্রিয় রয়েছেন বলা হচ্ছে এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও হয়রানীমূলক।
[ ২> ]