Advertisement


বছরে কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হলেও যাত্রীসুরক্ষায় নেই ব্যবস্থা


দৈনিক ইনানী।।
মহেশখালী-কক্সবাজার নৌ রুটে প্রতি বছর কয়েক কোটি টাকার রাজস্ব আয় করে সরকার।

কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হলেও অদৃশ্য কারণে দুই ঘাটের জেটি গুলো সংষ্কার হচ্ছেনা দীর্ঘদিন থেকে ৷ বছরের পর বছর ধরে জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে আছে । নেই কোন সংস্কার কিংবা নতুন তৈরীর উদ্যোগ। জেটিঘাট দুটি তালিজোড়া দিয়েই দিব্যি সাধারণ যাত্রীদের নিকট থেকে টোলের নামে কোটি টাকা আদায় করে নিচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
ঘাটে টোলের নামে গলাকাটা টাকা আদায় ও বানিজ্য চললেও যাত্রী সেবার মানোন্নয়ন বা যাত্রীদের নিরাপত্তায় বরাবরই উদাসীন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ৷
মহেশখালী কক্সবাজার নৌরুটে চাকরিজীবী, স্থানীয় লোকজন ও পর্যটক মিলে প্রতিদিন আনুমানিক ৫হাজার লোক আসা যাওয়া করে থাকে ৷
  যাত্রীদের অভিযোগ, জেটিঘাটে যাতায়াতের টোল ও মালামালের উপর অনিয়ন্ত্রিত টোলের নামে টাকা আদায়ে ছাড় না দিলেও যাত্রীদের সুবিধার্থে কোন উদ্যোগই গ্রহণ করেননি ঘাটে দায়িত্বরতরা। তবে দায়িত্বরতরা এ অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করেন।

১০ অক্টোবর (শুক্রবার) আনুমানিক বিকেল ৩টায় মহেশখালী জেটিঘাট সংলগ্ন কাঠের তৈরী জেটিটি হঠাৎ ভেঙ্গে পড়ে, এতে ১০ জন যাত্রী আহত হয়। বেশ কয়েকজন মহিলা ও শিশু যাত্রী কাদা পানিতে পড়ে যায়। নারী ও শিশুদের কান্নায় ঘটনাস্থলে  এক ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় ৷


প্রত্যক্ষদর্শী ও আহতদের সাথে কথা বলে জানা যায়-
ঘাটে পর্যাপ্ত বোট থাকার পরেও চালকরা নানান অযুহাতে কক্সবাজার যেতে অপারগতা প্রকাশ করে। ফলে যাত্রীদের ভীড় জমে যায়। যাত্রীরা ভীড় ঠেলে বোটে উঠতে গেলে হঠাৎ কাঠের জেটিটি ভেঙ্গে পড়ে। কিছু বুঝে উঠার আগেই সবাই কাদায় পড়ে যায়। অনেকেই হাতে পায়ে আঘাত পায়, যাত্রীদের ব্যবহৃত ব্যাগ, মোবাইল ফোন সহ জামাকাপড় নষ্ট হয়ে যায়।
 অপরাপর যাত্রীরা আহতদের উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যাবস্থা করে বলে জানা যায় ।

এদিকে ভাটার সময় খালে পানি শুকিয়ে যাওয়ায় দুর্ঘটনার পর থেকে টানা ৫/৬ ঘন্টা বোট চলাচল বন্ধ থাকে। জোয়ার আসলে তা স্বাভাবিক হয়। হঠাৎ বোট চলাচল বন্ধ হওয়ায় ঘাটে অস্বাভাবিক হারে যাত্রীদের ভীড় জমে যায়।


 যাত্রীরা এই অনিয়মের জন্যে ঘাট পরিচালনা কর্তৃপক্ষকেই দোষারোপ করছেন।
যাত্রীরা বলেন, ভাটার সময় কয়েকটি ছোট ছোট নৌকা দিলে যাত্রীদের বোটে উঠতে সমস্যা হতোনা। কিন্তু সেই ব্যাবস্থা কেউ করেনি ৷

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মহেশখালী জেটিঘাট সংলগ্ন খালটি শুকিয়ে যাওয়ায় জেটির পাশে আরেকটি কাঠের জেটি নির্মাণ  করা হয়। বর্ধিত অংশটি তৈরীর পর দীর্ঘদিন কোন ধরণের সংস্কার হয়নি । প্রতিদিন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় যাত্রীরা পারাপার করে থাকে। অপরদিকে কক্সবাজার ৬নং ঘাটের জেটির অবস্থাও নাজুক। যে কোন সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

বিশ্বস্থ সূত্রে জানা যায়, গত বছর দুই ঘাট থেকে প্রায় দুই কোটি টাকা টোল আদায় করা হয়।কিন্তু যাত্রীসেবার মানোন্নয়নে  আদায়কৃত টোল থেকে কোন অর্থ ব্যয় করা হয়নি। এই বছরও টোল আদায়ের পরিমাণ দুই কোটি ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা  করা হচ্ছে।

জসিম, এরফান, রুবেল সহ কয়েকজন যাত্রী জানিয়েছেন গত করোনার পর হঠাৎ করেই জনপ্রতি ১০ টাকা করে বোট ভাড়া বাড়ানো হয়। সেসময় যাত্রীরা প্রতিবাদ করলেও বাড়তি ভাড়া আদায়ের সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত করে কর্তৃপক্ষ। তাদের সুবিধার্থে যে কোন সময় যে কোন সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিলেও যাত্রীদের সুবিধার্থে কিছুই করছেনা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বরং সেবার নামে অনিয়ম ও দুর্নীতি করে টোলের নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহফুজুর রহমান জানান, ঘাটে দুর্ঘটনার খবর শুনে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। যেহেতু কাঠের তৈরী জেটিঘাট ছাড়া ভাটার সময় মানুষ বোটে উঠতে পারবেনা, সেহেতু দ্রুত ঠিক করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এই ব্যাপারে অবগত করা হয়েছে। রিপোর্টারঃ আনম হাসান।।