কক্সবাজার।। নানা হট্টগোল ও বিশৃঙ্খলার এবং সহিংসতার মধ্যে দিয়ে আজ ১১ নভেম্বর বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে কক্সবাজার জেলার ৩ টি উপজেলার ২১ টি ইউনিয়ন পরিষদের ভোট গ্রহন । সহিংসতায় সদরের খুরুশকুলের তেতৈয়ায় একজন নিহত ও দুই পুলিশ ৪ জন আহত হয়েছে। এতে ওই কেন্দ্রের ভোট গ্রহন স্থগিত রাখা হয়েছে। উখিয়ার হলদিয়া পালংয়ে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সংঘর্ষে ১২ জন আহত হয়েছে এবং ১ টি ওয়ার্ডের ভোট ভোট গ্রহন স্থগিত রাখা হয়েছে।। এছাড়া সদরের চৌফলদন্ডীতে একজ এজেন্ট ও একজন পুলিশের এসআই আহত হওয়ার খবর পাওয়ো গেছে। তাছাড়া রামু জোয়ারির নালায় তিন চেয়ারম্যান প্রার্থীর গন্ডগোল হয়েছে বলেও জানা গেছে। উখিয়ার জালিয়াপালং এক কেন্দ্রে নৌকার পক্ষে জোর করে সীল মারার অভিযোগ করেছে স্বতন্ত্র প্রার্থী। বিচ্ছিন্ন এসব ঘটনা বাদ দিলে জেলার ২১টি ইউণিয়নের সুষ্ঠু ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বর্তমানে প্রার্থী ও সমর্থকরা ফলাফল গণণা ও ঘোষণার অপেক্ষায় কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে। -খবর দৈনিক কক্সবাজার অনলাইন এর।
কক্সবাজার জেলা নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, বৃহিস্পতিবার সদর উপজেলার ঝিলংজা, খুরুশকুল, চৌফলদন্ডী ও ভারুয়াখালি এবং পিএমখালীর ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এতে খুরুশকুলে তেতৈয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালযে ১ নং ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী শেখ কামাল ও আবু ছিদ্দিকের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে আকতারুরজামান পুতু (৩০) নামের একজন নিহত হয়। এছাড়া দুই পুলিশ সহ ৬ জন আহত হয়েছে। এই কারণে সেই ভোট কেন্দ্রে ভোটার যায়নি। তাই ভোট গ্রহন স্থগিত রাখা হয়েছে ওই কেন্দ্রের। এছাড়া চৌফলদন্ডীর ইউপির ৩, ৭, ও ৮ নং ওয়ার্ডের কেন্দ্রে বিচ্ছিন্ভাবে হট্টগোল হয়েছে। এতে এক মহিলা সদস্যের এজেন্ট এবং পুলিশের এক এসআই আহত হয়েছে। রামু উপজেলার ফতেখারকুল, গর্জনিয়া, কচ্ছপিয়া, রশিদনগর , জোয়ারিরনালা, ইদগড়, চাকমারকুল. দক্ষিণ মিঠাছড়ি, রাজারকুল, কাওয়ারখোপ ও খুনিয়াপালংয়ে ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই উপজেলার শুধুমাত্র জোয়ারিয়ারনালা নৌকার প্রার্থীর সাথে বিদ্রোহী প্রার্থী যুবলীগ নেতা আবছার কামাল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এমপি সাইমুম সরওয়ার কমলের পিএস খোকেনের বাবা বিএনপি নেতা নুরুল কবিরের কয়েকদন্ডা বাকবিতান্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। অন্য ইউনিয়নে কোন হট্টগোলের খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে উখিয়া উপজেলার হলদিয়াপালং , জালিযাপালং, রত্নাপালং, রাজাপালং ও পালংখালীতে ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচণে দুটি কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী অধ্যক্ষ শাহ আলম ও বিদ্রোহী প্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের ইমরুল কায়েস চৌধুরীর সমর্থকের মধ্যে সংঘর্ষে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১২ জন আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এতে ওই ইউপির ৫ নং ওয়ার্ডের নলবনিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রটির ভোট গ্রহন স্হিগিত রাখা হয়েছে। এছাড়া জালিয়াপালংয়ে বিএনপি সমর্থিত স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী নুরুল আমিন বৃহস্পতিবার দুপুর ২ টার দিকে ইউনিয়নের ৯ টি কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বলেন, নৌকার প্রতীকের এজেন্টরা যারা ভোটার তারা সীল মারার সময় ব্যালেট কেডে নিচ্ছে এবং প্রত্যেকটা বইতে নিজেরাই সীল মেরে দিচ্ছে। আমি এসব দেখেছি। আমি এবিষয়ে প্রিসাইডিং অফিসারকে মৌখিক অভিযোগ করেছি। আমাকে নির্বাহি ম্যাজিষ্টেট বলেছে বিষয়টি তিনি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করবে। এক প্রশ্নের জবাবে স্বতন্ত্র প্রার্থী নুরুল আমিন বলেন, আমি ৯ টি কেন্দ্রই পরিদর্শন করেছি। শুধু ৩ নং ওয়ার্ডের সোনারপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রেই নৌকার পক্ষে জোর করে সীল মারা হচ্ছে। অন্য কেন্দ্রে এমন সমস্যা নাই।
এবিষয়ে র্যাব ১৫ এর কক্সবাজার কোম্পানি কমান্ডার মেজর মেহেদী হাসান বলেন, বিচ্ছিন্ন ও ছোটখাট দুই একটি ঘটনা বাদ দিলে ২১ টি ইউনিয়নেই শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহন সম্পন্ন হয়েছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম বলেন, নির্বাচণে সহিংসতা ও গন্ডগোল করার কারণে প্রায়ই ২০ জনকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। যাচাই বাছাই করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কক্সবাজারের নির্বাচন কর্মকর্তা এসএম শাহাদাত হোছাইন বলেন, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ৩ টি উপজেলার ২১ টি ইউপি ২০১ টি কেন্দ্রের ভোট গ্রহন শেষ হয়েছে। তবে গন্ডগোল ও সহিংসতার কারণে খুরুশকুল তেতৈয়ার একটি ও হলদিয়াপালংয়ের একটি কেন্দ্রের ভোট গ্রহন স্থগিত রাখা হয়েছে। এখন ভোট গণণা চলছে। আমাদের চেষ্টা থাকবে কেন্দ্র থেকেই ফলাফল ঘোষনার।
কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার হাসানুজাম্মান বলেন, তেতৈয়া দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে একজন নিহত হওয়া ছাড়া এবার ইউপি নির্বাচণে আর কোন বড় ধরণের ঘটনা ঘটে