সব খবর রিপোর্ট ।। মাতারবাড়ির মজিদিয়া মাদ্রাসায় সৃষ্টি সংকট এ মুহুর্তেই কাটছে না। তবে আশার কথা হলো রহস্যজনক কারণে দীর্ঘদিন বিষয়টি নিয়ে অবহেলা চললেও এবার সংকট নিরসনে কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। গঠন করা হয়েছে কাঙ্খিত তদন্ত কমিটিও। এরইমধ্যে নড়েচড়ে বসেছে মাদ্রাসা ভিত্তিক চক্রটি। -তথ্য সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
সূত্রের তথ্য বলছে -গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর মাতারবাড়ি মজিদিয়া সুন্নিয়া সিনিয়র ( আলিম ) মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ কামাল হোছাইনের অবসরের পর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব নিতে নানা তদবির চালিয়েছে কয়েকজন শিক্ষক। অবশেষে মাদ্রাসার শিক্ষকদের নানা বিরোধিতা থাকার পরেও জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয় রফিকুল হায়দারকে। এদিকে দায়িত্ব পাওয়ার পর নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রফিকুল হায়দারের বিরুদ্ধে। একই ভাবে নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মাস্টার মোহাম্মদ উল্লাহ, শিক্ষক নুর বক্সসহ একাধিক শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
সূত্র জানিয়েছে -মাদ্রাসায় থাকা বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক বই পড়িয়ে ফেলা, সরকারি বই বিক্রি, নারীঘটিত অভিযোগ ও প্রতিষ্ঠানের টাকা আত্মসাতের নানা অভিযোগ উঠে অনেকের বিরুদ্ধে।
এ অবস্থায় গত বছরের ২৩ নভেম্বর মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার) ফয়জুল করিমের উপস্থিতিতে মাদ্রাসা কমিটির এক বৈঠকে অনেকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগের কথা উঠে আসে। তা রেজুলেশন নোটও করা হয়। সেদিন ওই বৈঠকেই এ সব বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয় এবং মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দ্রুত তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে বলে জানান। তবে রহস্যজনক কারণে এ কমিটি গঠন করা হয়নি দীর্ঘদিন ধরে। এ অবস্থায় প্রতিষ্ঠানটির সার্বিক সংকটও বাড়তে থাকে। প্রশ্ন উঠে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের ভূমিকা নিয়েও।
এরইমধ্যে বিষয়টি মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের নজরে এলে তিনি মাদ্রাসাটিতে চলমান সংকট নিরসনে কার্যকরি উদ্যোগ নেন। গত ১৭ জানুয়ারি ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে পত্র জারি করা হয় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে।
এদিকে তদন্ত কমিটি গঠন হওয়ার বিষয়টি জানাজানি হলে নড়েচড়ে বসেন দুর্নীতিবাজ চক্রটি। মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি, অধ্যক্ষ ও কতিপয় শিক্ষক দুর্নীতি, অনিয়ম ও নৈতিকতা নিয়ে পরস্পর বিরোধী অভিযোগ করে আসলেও বেলাশেষে সকলই লুটপাট ও অনিয়মের সাথে যুক্ত বলে ওয়াকিবহাল সূত্রের দাবি।
এখানে সভাপতি মাতারবাড়ির সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মাস্টার মোহাম্মদ উল্লাহ ও অধ্যক্ষ রফিকুল হায়দার দুইটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে নিজের স্বার্থের জন্য প্রতিষ্ঠানের সর্বনাশ করে যাচ্ছে বলে অনেকেই মনে করছেন। একটি গ্রুপের পক্ষে মাতারবাড়ির বর্তমান চেয়ারম্যান আবু হায়দার পক্ষের লোকজনের চাপা সমর্থন বিদ্যমান বলেও নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।
মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী (ভারপ্রাপ্ত) অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, মাতারবাড়ি একটি মাদ্রাসা নিয়ে অভিযোগ ওঠার পর ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।