সূত্র জানায়- বড় মহেশখালীর মাহারাপাড়া এলাকার বাসিন্দা জনৈক আব্দুচ সামাদ এর প্রবাসী পুত্র মো. সিরাজুল মোস্তফার সাথে গত ১৬ বছর আগে সামাজিক ও ধর্মীয় রীতিতে বিয়ে হয় মহেশখালী পৌর সদরের গোরকঘাটা পশ্চিম সিকদার পাড়া এলাকার এক নারীর। মূলতঃ সিরাজুল মোস্তফা দুবাই প্রবাস থাকাকালীন দুই পক্ষের মধ্যে সামাজিক ভাবে বিয়ের সিদ্ধান্ত হয় এবং তিনি বিদেশ থেকে এসে বিয়ের পিড়িতে বসেন। বিয়ের পরে বেশ কিছু দিন তাদের দাম্পত্য জীবন সুখের ছিলো। তাদের সংসারে এক সন্তানের জন্মও হয়। কনে পক্ষের পরিবারের সহযোগীতায় শিকদার পাড়ার শশুর বাড়ির কাছে এক খণ্ড জমি কিনে তাতে নিজের একটি বাড়িও করেন এই দম্পতি। বাড়ির কিছু অংশ ভাড়া দিয়ে বাকি অংশে নিজেরা সংসার পেতে বসবাস করে আসছিলেন। এরই মধ্যে গোপনে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে মো. সিরাজুল মোস্তফা। শুরু হয় দাম্পত্য কলহ। এরই মধ্যে স্ত্রীর উপর ধারাবাহিক ভাবে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করতে থাকে সিরাজুল মোস্তফা। এক পর্যায়ে প্রথম স্ত্রীকে রেখে গোপনে পরকীয়া প্রেমিকাকে বিয়ে করার উদ্যোগ নেয় সিরাজুল মোস্তফা। এ অবস্থায় গত দুই বছর আগে এক সন্ধ্যায় সুপরিকল্পিত ভাবে স্ত্রীকে বেদড়ক পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এরইমধ্যে স্ত্রীকে ঔষধ খাওয়ানোর কৌশল করে উপর্যোপরি ঘুমের ঔষধ খাইয়ে দিয়ে স্ত্রীকে হত্যার চেষ্টা চালায় এবং স্ত্রীকে বাড়িতে মুমূর্ষু অবস্থায় রেখে স্বামী সিকদার পাড়ার ওই বাড়ি থেকে চলে যায়। তখনও বিষয়টি জানাজানি হয়নি। খবর পেয়ে ওই নারীর পরিবারের লোকজন মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে মহেশখালী হাসপাতালে ভর্তি করায়। অজ্ঞান অবস্থায় হাসপাতালে বেডে ওই নারীর চিকিৎসা চলছিল। ওই নারীর পরিবারে বৃদ্ধ বাবা ছাড়া উপযুক্ত কোনো ভাই নেই। তাছাড়া মেয়ের পারিবারিক বিষয় হিসেবে স্বামীর ঘরে মেয়ের সুখ শান্তির আশায় মেয়েকে এভাবে মারধরের বিষয়টিও কাউকে জানাতে চায়নি।
এরই মধ্যে পরকীয়ায় আসক্ত সুচতুর স্বামী সিরাজুল মোস্তফা পরিকল্পিত ভাবে গোপনে ওই বাড়িতি বিক্রি করে দিয়ে গোপনে পালিয়ে যাওয়ার জন্য সব কিছু গুছিয়ে নেয়। এ বিষয়টি তার স্ত্রী ও স্ত্রীর পরিবারের কেউ জানতো না। তাছাড়া প্রবাস থেকে এসে বড় মহেশখালীর মাহারাপাড়া থেকে গিয়ে পশ্চিম সিকদার পাড়া এলাকায় বাড়ি করায় ওখানে তার কোনো আত্মীয় ছিল না এবং তাকে কেউ চিনতনা। এ সুযোগকে কাজে লাগায় সুচতুর সিরাজুল মোস্তফা।
এদিকে স্ত্রী অজ্ঞান অবস্থায় মহেশখালী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অতিমাত্রায় ঘুমের বড়ি খাওয়ানোর কারণে তার জ্ঞান ফিরছিলো না। এরই মধ্যে গভীর রাতে সুচতুর স্বামী সিরাজুল মোস্তফা স্ত্রীর জন্য কান্নাকাটি করার অভিনয় করে হাসপাতালে যায়। এক পর্যায়ে বিষয়টি তার পারিবারিক বিষয় এবং তার স্ত্রীর চিকিৎসা সে করাবে বলে অন্যদেরকে হাসপাতাল থেকে চলে যেতে বলে। তার কথায় সরল বিশ্বাস করে মেয়ের পরিবারের সদস্যরা হাসপাতাল থেকে বাড়িতে চলে আসে। এদিকে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর কাণ্ডটি ঘটল ঠিক তখনই।
স্ত্রীর তখনও জ্ঞান ফিরেনি। গভীর রাতে যখন হাসপাতালজুড়ে যখন সুনসান নীরবতা ঠিক তখনই পরকীয়ায় হাবুডুবু খাওয়া সিরাজুল মোস্তফা তার স্ত্রীর শরীরে থাকা বিভিন্ন স্বার্ণালঙ্কার খুলে নেয়, এমনকি নাকের ফুল পর্যন্ত খুলে নেয় বলে সূত্রের অভিযোগ। সব কিছু নিয়ে হাসপাতলে মুমূর্ষু স্ত্রীকে একা ফেলে রাতেই পরকীয়া স্ত্রীকে নিয়ে অজনার উদ্দেশ্যে চম্পট দেয় এই লম্পট ব্যক্তি।
এরই মধ্যে রাতারাতি বাড়ি থেকে প্রয়োজনীয় সব কিছু সরিয়ে নিয়ে বাড়ির অন্যান্য জিনিসনহ বাড়িটি বিক্রি করে বাড়ির নতুন মালিককে রাতেই বাড়িতে ঢুকিয়ে দিয়ে নিখোঁজ হয়ে যায় সে।
সকালে বিষয়টি জানাজানি হলে সর্বত্র তোলপাড় পড়ে যায়। অনেক স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও সে থেকে এ পর্যন্ত তার আর সন্ধান পাওয়া যায় নি। কেউ কেউ মনে করছেন ঠান্ডা মাথায় দীর্ঘ পরিকল্পনা মতো তার পরকীয়া প্রেমিকাকে বিয়ে করে ওই মেয়েটিকে নিয়ে ফের বিদেশে পাড়ি জমায়। তবে বর্তমানে চট্টগ্রামের হালিশহরে তারা বসবাস করছে বলেও জানা যায়। এ ঘটনা সিনেমার কাহিনীকেও হার মানাবে বলে মনে করেন অনেকেই।
এদিকে এ ঘটনার পর দীর্ঘ ১ মাস চিকিৎসাধীন থেকে ওই নারী কিছুটা সুস্থ হলেও এখনও পর্যন্ত সেই মুমূর্ষুতার ধকল বয়ে বেড়াচ্ছে বলে জানা গেছে।
এ ঘটনায় সিরাজুল মোস্তফার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করেন ওই নারী। মামলায় তার বিরুদ্ধে সাজা হয়ে যায়, থানায় আসে গ্রেফতারি পরোয়ানাও। বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও পুলিশ তার সন্ধান পাচ্ছে না। এ অবস্থায় তার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তার সন্ধান দিতে পারলে ৫০ হাজার নগদ টাকা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেন মামলার বাদি।
01881 527799 নম্বরে ফোন করে তার সন্ধান দেওয়া যাবে এবং এই নম্বরে যোগাযোগ করে পুরস্কারে অর্থ গ্রহণ করা যাবে বলে মামলা বাদি জানিয়েছেন।