এর আগে র্যাবের দেয়া এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ঘটনার বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব জানায়-
কক্সবাজার মহেশখালীর কুতুবজোম এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ১,৩০,০০০ পিস ইয়াবা উদ্ধারসহ চারজন মাদক কারবারী র্যাব-১৫ কর্তৃক গ্রেফতার।
র্যাব-১৫ কক্সবাজার দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নে বদ্ধ পরিকর। মাদক কারবারীরা প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে এ্যাডভান্স টিম গঠন’সহ ছদ্মবেশ ও নানাবিধ অভিনব পন্থায় দেশের বিভিন্ন জায়গায় মাদক ছড়িয়ে দিচ্ছে। এতে করে যুব সমাজ মাদকাসক্ত হয়ে বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। দেশব্যাপী মাদকের বিস্তাররোধসহ সমাজে বিরাজমান নানাবিধ অপরাধ দমন ও অপরাধের সাথে জড়িত অপরাধীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাব-১৫, কক্সবাজার সব সময় অত্যন্ত অগ্রণী ভূমিকা পালন এবং আন্তরিকতার সহিত নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
কক্সবাজার একটি ইয়াবা পাচার প্রবণ এলাকা। র্যাব-১৫, কক্সবাজার’সহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক পরিচালিত অভিযানে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য তথা ইয়াবা প্রতিনিয়তই জব্দ করা হচ্ছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ইয়াবা পাচারের সাথে মাদক কারবারীরা স্থল ও নৌ-পথে মাদক পাচারের মাধ্যম হিসেবে বিভিন্ন ধরণের যানবাহন, ফিশিং বোট এবং ট্রলার ব্যবহার করছে। র্যাব এই মাদক কারবারীর সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে নজরদারী বৃদ্ধি করে।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ১১ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে র্যাব জানতে পারে একটি চিহ্নিত মাদক কারবারি চক্র পার্শ্ববর্তী দেশ হতে বড় একটি মাদকের চালান নিয়ে ইঞ্জিন চালিত কাঠের ফিশিং বোটযোগে সমুদ্রপথে কক্সবাজারের মহেশখালী কুতুবজোম ইউনিয়নের ঘটিভাঙ্গা ব্রীজের দিকে আসছে। এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওইদিন বেলা অনুমান ১১টা ৫মিনিটের সময় র্যাব-১৫, কক্সবাজার এর সিপিএসসি’র একটি চৌকস আভিযানিক দল বর্ণিত স্থানে মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানস্থলে র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে উক্ত ফিশিং বোটে থাকা মাদক কারবারীরা পালানোর চেষ্টাকালে চারজন মাদক কারবারীকে র্যাব গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
আটককৃত ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, উক্ত বোটের ভিতর বিশেষ কায়দায় রক্ষিত অবস্থায় অবৈধ মাদকদ্রব্য ইয়াবা ট্যাবলেট মজুদ রয়েছে। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত ব্যক্তিদের ভাষ্যমতে ফিশিং বোট তল্লাশী করে বোটে বিশেষ কায়দায় রক্ষিত মাছ রাখার বক্সের ভিতর হতে সর্বমোট ১,৩০,০০০ (এক লক্ষ ত্রিশ হাজার) পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও ৩টি মোবাইল ফোন, ৫টি সীম কার্ড উদ্ধার এবং মাদক পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত ১টি ফিশিং বোট জব্দ করা হয়।
কবির হোসেন (৪০), পিতা-মৃত তাজের মুল্লুক, মাতা-মৃত আয়েশা খাতুন, সাং-পশ্চিম কুতুবজোম পাড়া, ০৫নং ওয়ার্ড, ইউনিয়ন-কুতুবজোম।
ছালামুতুল্লাহ (২১), পিতা-মৃত হাবিবুল্লাহ, মাতা-ফেরেজা খাতুন, সাং-কুতুবজোম তাজিয়া ঘাটা, ০৩নং ওয়ার্ড, ইউনিয়ন-কুতুবজোম।
রুহুল আমিন (৪৫), পিতা-মৃত মজু বলী, মাতা-মৃত বদু বিবি, সাং-কুতুবজোম পশ্চিমপাড়া, ০৫নং ওয়ার্ড, ইউনিয়ন-কুতুবজোম, থানা- মহেশখালী, জেলা-কক্সবাজার।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়- গ্রেফতারকৃতরা পার্শ্ববর্তী দেশের মাদক চোরাচালান চক্রের যোগসাজসে দেশে অবৈধ মাদক ইয়াবা চোরাকারবারির সাথে জড়িত। চক্রটি পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে সীমান্তবর্তী এলাকার স্থল ও নৌ-পথ দিয়ে কক্সবাজার ও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ইয়াবাসহ অন্যান্য মাদক চোরাচালানের সাথে জড়িত। এই চক্রটি মূলত কক্সবাজার কেন্দ্রিক একটি মাদক চোরাকারবারী চক্র। গ্রেফতারকৃতরা সাগর পথে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে মহেশখালীর সোনাদিয়া ও ঘটিভাঙ্গায় ইয়াবার চালান নিয়ে আসে। পরবর্তীতে এসব ইয়াবা নৌপথে ও সড়ক পথে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে চালান করে। তারা কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তাদের নির্ধারিত এজেন্টদের নিকট নৌ-পথে মাছের ও লবণের ট্রলারে এবং সড়ক পথে ট্রাক/কাভার্ড ভ্যানে এসব ইয়াবা পৌঁছে দিয়ে থাকে বলে জানা যায়।
উদ্ধারকৃত আলামতসহ গ্রেফতারকৃত মাদক কারবারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণার্থে কক্সবাজার জেলার মহেশখালী থানায় লিখিত এজাহার দাখিল করা হয়েছে।
এদিকে রাতে মহেশখালী থানার ওসি সুকান্ত চক্রবর্তী এ ঘটনায় মহেশখালী থানায় নিয়মিত মামলা রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানান।