Advertisement


মহেশখালী- কক্সবাজার নৌরুটে নৈরাজ্য বন্ধে কক্সবাজারে সড়ক অবরোধ করে ছাত্রজনতার বিক্ষোভ

৩ ঘণ্টা অবরোধের পর প্রশাসন কর্তৃক দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা আজ থেকে স্পিডবোট ভাড়া ৯০ টাকা, সাধারণ বোট ভাড়া ৩০ টাকা


বিশেষ সংবাদদাতা।। মহেশখালী-কক্সবাজার নৌরুটে  নৈরাজ্য ও যাত্রী হয়রানি বন্ধের দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন ছাত্র জনতা। ছাত্রদের পক্ষ থেকে দেয়া ১০ দফা দাবি মানা না হওয়ায় মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) মহেশখালীর শত শত শিক্ষার্থী কক্সবাজার শহরের প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকেন। এ সময় সড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা আসলে শিক্ষার্থীরা সড়ক থেকে সরে আসেন।

জানা গেছে- সকাল ১০টা থেকে মহেশখালী উপজেলা হতে নৌপথ পাড়ি দিয়ে কক্সবাজার শহরে আসেন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা এ সময় পূর্ব ঘোষিত শহরের প্রধান সড়কের গুণগাছতলা পয়েন্টে ছাত্রজনতা জমায়েত হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় ছাত্রদের এসব দাবিকে সংহতি জানিয়ে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ ও  সাধারণ জনগণ ছাত্রদের এ আন্দোলনে শরিক হন। এ সময় ছাত্রজনতা মাইকে প্রতিবাদি স্লোগান ও বক্তৃতা দেন।

সড়কে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীরা তাদের দাবির পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দিতে কক্সবাজারের বিভিন্ন সড়ক বন্ধ করে দেন। আন্দোলনকারীরা সড়কের উপর বসে ও শুয়ে পড়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এসময় কক্সবাজার বৈষ্যম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন-সহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা দাবির সাথে একাত্মতা পোষণ করে আন্দোলনে অংশ নেয়।

ছাত্রদের দশ দফা দাবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলো- স্পিডবোট ভাড়া কমিয়ে জনপ্রতি ৯০ টাকা, কাঠের বোট বা গামবোটের ভাড়া জনপ্রতি ৩০ টাকা করা এছাড়াও গণপরিবহন চালু, যাত্রীদের জন্য লাইফ জ্যাকেট সরবরাহ করা, নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত নৌযান, ব্রেস্টফিডিং কর্ণার চালু-সহ টিকিট সিস্টেম চালু করা।

এদিকে আন্দোলন চলাকালে এক পর্যায়ে বেলা দেড়টার দিকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রোবাইয়া আফরোজ, সহকারি কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নওশের ইবনে হালিম ছাত্রজনতার প্রতিনিধির সাথে কথা বলতে আসেন এবং দাবি মেনে নিয়ে সেখান থেকেই তারা ছাত্রজনতার ১০ দফার মধ্য থেকে তাৎক্ষণিক স্পীডবোট ভাড়া ৯০ টাকা ও কাঠের বোট জনপ্রতি ৩০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করার কথা জানান এবং সেটি পরদিন বুধবার থেকে কার্যকর করে ঘাটে পোস্টার টাঙিয়ে দেওয়া হবে বলে জানান। এছাড়াও অন্যান্য দাবিগুলো ধীরে ধীরে বাস্তবায়নের ঘোষণা দেন।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা আসার পর আন্দোলনকারীরা সড় থেকে সরে আসেন।

ব্যস্ততম শহরে শিক্ষার্থীদের টানা ৩ ঘণ্টার অবরোধের ফলে সড়কে কিছু সময়ের জন্য যাত্রী ও পণ্য পরিবহন স্থবির হয়ে পড়ে। তবে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষ হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা আসার পর ছাত্র জনতা অবরোধ তুলে নিলে শহরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে। পরে ছাত্রজনতা শহীদ মিনার চত্তরে সমবেত হয়ে দিনের কর্মসূচি সমাপ্ত করেন।

প্রসঙ্গতঃ দীর্ঘদিন থেকে সিন্ডিকেট করে মহেশখালী- কক্সবাজার নৌরুটে যাত্রী হয়রানি ও জুলুম চলে আসছিলো বলে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবি।