Advertisement


নদীতে যাত্রী নিখোঁজঃ দীর্ঘ সময় পর্যন্ত প্রশাসনের অনুসন্ধান তৎপরতা ছিলো না, ফোন ধরেনি কারও


বিশেষ সংবাদদাতা।। রাতে মহেশখালী-কক্সবাজার নৌপথে মহেশখালী আসার সময় বাঁকখালী নদীর মোহনায় প্রবল স্রোতের তোড়ে একটি যাত্রীবাহী নৌকা থেকে ৪ জন যাত্রী নদীতে ছিটকে পড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় তাৎক্ষণিক ভাবে ২জন যাত্রীকে জীবিত উদ্ধার করা গেলেও এখনও ২জন যাত্রী নিখোঁজ রয়েছে। মহেশখালীর উপজেলা প্রশাসন বলছে- নিখোঁজ ব্যক্তির সন্ধান ও উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে ঘাট ও এই নৌরুটের অনিয়ম নিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি- যাত্রী নিখোঁজের পর প্রশাসনের কোনো প্রকার উদ্ধার তৎপরতা ছিলো না।

জানা গেছে- ২২ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যা ৭টার  দিকে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন দুর্ঘটনার কবলে পড়া নৌকার যাত্রীরা।

জাহিদুল ইসলাম সাগর নামে দুর্ঘটনার কবলে পড়া নৌকার এক যাত্রী জানান- প্রচণ্ড স্রোতের তোড়ে তাদের বহন করা নৌকা (এক ধরণের গাম বোট) আশঙ্কাজনক ভাবে দুলছিলো। এ সময় তাদের বোটে থাকা ৪জন যাত্রী নদীতে পড়ে যায়। পরে ২জন যাত্রীকে উদ্ধার করা হলেও বাকি ২ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। উদ্ধার হওয়া ২ জনের মধ্যে মোহাম্মদ ছিদ্দিক নামের এক যাত্রীর অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানান তিনি।  

সূত্রে জানা যায় - মহেশখালীর উদ্দেশ্য সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে কক্সবাজার ৬ নম্বর ঘাট থেকে ৫০-৬০ জন যাত্রী নিয়ে রওয়ানা দেন গামবোট হিসেবে পরিচিত এই নৌকাটি। কিছু দুর যাওয়ার পর সাগরের বাঁকখালীর মোহনায় গেলে প্রবল স্রোতের কবলে পড়ে নৌকা থেকে ৪ যাত্রী ছিটকে নদীতে পড়ে যায়। তাৎক্ষণিক ভাবে মোহাম্মদ ছিদ্দিক ও মোহাম্মদ বেলাল নামের ২ যাত্রীকে উদ্ধার করা হলেও বাকি ২জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। নিখোঁজ ২জনের মধ্যে উপজেলার হোয়ানকের ধলঘাট পাড়ার মোহাম্মদ মনির আহমদ নামে একজনের নাম জানা যাচ্ছে। অন্যজনের জনের নাম জানা সম্ভব হয়নি। তবে এ রিপোর্ট লেখার সময় ঘাটের মহেশখালী অংশে অবস্থান করা মহেশখালীর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাছবীর হোসেন জানিয়েছেন এ পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন ১ জন। তার নাম মনির।

এদিকে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও কোস্টগার্ডের টিম যৌথভাবে উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। তবে এখনো কাউকে উদ্ধার করার খবর পাওয়া যায়নি।

মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মীকি মারমা জানিয়েছেন- যাত্রী নিখোঁজের ঘটনার পরপরই একাধিক বোট নিয়ে নিখোঁজ ব্যক্তির অনুসন্ধান ও উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। প্রশাসন থেকে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদারকি করা হচ্ছে, তবে নদীতে অতিরিক্ত স্রোতের কারণে সঠিক ভাবে কাজ করা দূরহ হয়ে পড়েছে। একটি সী-এম্বলেন্সসহ অনুসন্ধানে থাকা একাধিক বোটের মধ্যে একটি বোটে নিখোঁজের স্বজনরা রয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান- ঘটনার পর দীর্ঘ সময় পর্যন্ত মহেশখালীর উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসন ও কোস্টগার্ড এর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও কোনো প্রকার সাড়া পাওয়া যায়নি। এ নিয়ে তারা কারও ফোন রিসিভ পর্যন্ত করেনি। ঘটনার দীর্ঘ সময় পর প্রশাসন উদ্ধার চেষ্টার নামে এক ধরণের প্রহসন করছে বলে তারা মনে করছেন। যখন উদ্ধার চেষ্টা চালানো হচ্ছে তখন নিখোঁজকে জীবিত উদ্ধার করার অবস্থা অনেকটা ক্ষীণ হয়ে এসেছে। প্রশাসনের এমন আচরণে তারা ক্ষুব্ধতা প্রকাশ করেন।