Advertisement


মামলা নিচ্ছে না পুলিশ; থানার বারান্দায় ঘুরছে ব্যান্ডেজ পরা বৃদ্ধ


এস. এম. রুবেল।। মাথায় আটটি সেলাই করা হয়েছে। তিন দিন পরপর হাসপাতালের জরুরী বিভাগে ক্ষতস্থানের ড্রেসিং করাতে হয়। একা চলতে পারছেন না, স্ত্রীর কাঁধে ভর করেই চলেন। তার উপর হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসা খরচ চালাতে। প্রতিবেদকের সাথে মুহাম্মদ আলমগীর  নামের পঞ্চাশোর্ধ আহত বৃদ্ধার দেখা হয় মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের সামনে। তার বাড়ি কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার বড়মহেশখা়লীর ফকিরাঘোনা গ্রামে। তিনি পেশায় দিনমজুর।

বৃদ্ধ মুহাম্মদ আলমগীর জানিয়েছেন, জমির সীমানা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ৫ অক্টোবর মুহাম্মদ ইসহাক ও মাহমুদুল করিম গাজী নামের দুই ব্যক্তি বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি পেটাতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে খুন করার লক্ষ্যে মুহাম্মদ ইসহাক তার মাথায় কোপ মারেন। এতে মাথার উপরাংশ কেটে রক্তাক্ত গুরুত্বর জখম হয়। তাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে স্ত্রী হাছিনা আকতারকেও মারধর করে প্রতিপক্ষের লোকজন। পরে প্রতিবেশী লোকজন তাদের মহেশখালী উপজেলা হাসপাতালে এনে চিকিৎসা করান। ডাক্তার মাথায় আটটি সেলাই দিয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, “ঘটনার পরপরই জড়িত দুইজনকে আসামী করে থানায় এজাহার জমা দিই। পুলিশের এসআই সাজ্জাদ ঘটনাস্থলে তদন্তে আসেন। ওই সময় আসামী মুহাম্মদ ইসহাক ও মাহমুদুল করিম পুলিশের সামনে হুমকি দেন। কিন্তু পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেননি। এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি।”

বৃদ্ধার স্ত্রী হাছিনা আকতার পুলিশের প্রতি অভিযোগ তুলে বলেন, “আমরা গরীব মানুষ বলে পুলিশ মামলা নিচ্ছে না। দশদিন ধরে থানায় ঘুরছি। পুলিশের অফিসার মামলার নেয়ার আশ্বাস দিয়ে মামলা নেয় না। ওসি সাহেবের সাথে দেখা করেছি, তিনিও আশ্বাস দিয়ে মামলা নেয়নি। গরীবের বিচার কোথাও নাই।”

পুলিশের এসআই সাজ্জাদ মামলা রেকর্ডের জন্য টাকা দাবী করেছে জানিয়ে ভুক্তভোগী মুহাম্মদ আলমগীর জানিয়েছেন, মামলা রেকর্ড করে আসামীদের ধরার অনুরোধ করলে এসআই সাজ্জাদ বলেন, “মামলার আগে ওসি সাহেব ও তদন্ত সাহেবকে খুশি করতে হবে। এরপর আমাকে কিছু দিলে দিবেন।” দাবীকৃত টাকা দেয়ার সামর্থ্য না থাকায় মামলা রেকর্ড করছে না পুলিশ; এমনটি অভিযোগ আহত বৃদ্ধার।

টাকা দাবীর বিষয়টি অস্বীকার করে পুলিশের উপপরিদর্শক সাজ্জাদ বলেছেন, “ঘটনার বিষয়ে প্রাথমিক তদন্তে এজাহারের সাথে ঘটনার মিল না থাকায় মামলা নেয়া হচ্ছে না। ওসি বলেছেন তাদের কোর্টে মামলা করতে।”

বিষয়টি নিয়ে মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ কাইছার হামিদ জানান, এজাহারে উল্লেখিত দুই আসামীর একজন ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত নন। তাই মামলাটি নেয়া হয়নি। তবে এসআই কর্তৃক মামলা রেকর্ডের শর্তে টাকা দাবীর বিষয়ে তিনি কোন মন্তব্য করেননি।