বার্তা পরিবেশক।। মহেশখালীর কালারমারছড়া নোনাছড়ি এলাকায় আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ফরিদা ইয়াছমিন সৈয়দা (কালামনি) নামে নিজ প্রতিবন্ধী বোনকে হত্যার তথ্য পাওয়া গেছে স্থানীয় ফরিদুল আলম ফরিদ ওরপে রাইফেল ফরিদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ফরিদের পক্ষের সন্ত্রাসী রফিক এ ঘটনা ঘটায় বলে গুঞ্জন চলছর। গত ৩১ অক্টোবর বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টায় কালারমারছড়ার ফকিরা ঘোনায় এ ঘটনা ঘটে। সন্ত্রাসীরা রাত দেড়টা হতে টানা ১২ থেকে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে। ধারনা করা হচ্ছে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী রফিক বাহিনীর প্রধান রফিকসহ কয়েকজন মিলে প্রতিবন্ধী নারী ফরিদা ইয়াছমিন সৈয়দাকে (কালামনি) গুলি করে হত্যা করে।
এ ঘটনায় পরদিন ভোর ৫টায় ঘটনাস্থলে থেকে লাশ উদ্ধার করে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। সকাল ১১ টায় পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রাথমিক তদন্ত চালায়৷ স্থানীয়রা রফিক বাহিনী ও ফরিদের ভয়ে মুখ খুলে ঘটনার মূল কাহিনী বলতে না চাইলেও দুয়েকজন নাম প্রকাশ ন করা শর্তে তথ্য দেন৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান- যাদের বিরুদ্ধে অভিযোত আনতে এ ঘটনা সাজানো হয়েছে তা সঠিক নয়। কারণ যে প্রতিবন্ধী নারী হত্যা হয়েছে সে নারীকে কোনো জালেমও হত্যা করবে না। তাছাড়া এতগুলো বাহিরের সন্ত্রাসী যদি তাদের ঘরে ঢুকে এভাবে তাণ্ডব চালায় তাহলে টানা পুরো বাড়িতে কেনো কোনো হৈ-হুল্লোড় ছিলো না।
অপর এক ব্যক্তি জানান- আমরা স্পষ্ট শুনেছি সন্ত্রাসীরা প্রতিবন্ধী নারী কালামনিকে হত্যা করে চলে যাওয়ার অন্তত ৫-৭ মিনিট পর কান্নার আওয়াজ এসেছে। ফরিদের সাথে প্রতিপক্ষের বিরোধ থাকতেই পারে, তাই বলে প্রতিপক্ষ একটা প্রতিবন্ধী নারীকে হত্যা করতে হবে? তাছাড়া নিজের প্রতিবন্ধী বোন ফরিদা ইয়াছমিন সৈয়দা (কালামনির) বহু পৈত্রিক সম্পত্তি বড় ভাই ফরিদ ভোগ দখল করে রেখেছে। প্রকল্পে অধিগ্রহন করা জমির কোন ভাগও কালামনিকে দেয়নি ফরিদ। তারাঁ আরও জানান- দলিলো বর বাড়ির পশ্চিম ভিটায় নিহত কালামনির বয়োবৃদ্ধা মা নিয়মিত অবস্থান করতেন, কিন্তু ঘটনার দিন ফরিদ মাকে ফকিরা ঘোনার পূর্বের পুরনো বাড়ি সরিয়ে রাখেন৷ নিহত কালামনিকে যে ঘরে থাকতে দিয়েছে সে ঘর একটা গোয়াল ঘরের মতো। ঘরটিতে একটা ফ্যান একটা বৈদ্যুতিক বাল্ব দেয়ার প্রয়োজন মনে করেনি ভাইয়েরা।
যাদের ফাঁসাতে বিএনপি নেতা ফরিদ এ ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের কয়েকজন আলোর পথে এসে স্বাভাবিক জীবন যাপন করছে। তন্মধ্যে মোহাম্মদ রশিদ অন্যতম। ৫ আগস্টের ছাত্রজনতার গনঅভ্যুত্থানে দেশের রাজনৈতিক ক্ষমতার পটপরিবর্তন হলে স্থানীয় বিএনপি নেতা ফরিদ ও নেছারের নেতৃত্ব সশস্ত্র মিলে মোহাম্মদ রশিদ ও রশিদের ভাই ছরোয়ারের মাছের ঘের দখলে নিয়ে নেয়।
আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফেরা মোহাম্মদ রশিদ জানান- মহান খোদা তালাহ্ আমার বিচার করবে যদি আমি এমন নৃশংস কাজ করি। সবকিছু ফরিদুল আলম ফরিদের ষড়যন্ত্র। ৫ আগস্টের পর থেকে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমাদের নিয়মিত হয়রানি করে আসছে ফরিদ। আত্মসমর্পণ করেও এখন আমরা নিরাপদ নয়। স্বাভাবিক জীবনযাপনই যদি করতে না পারলাম তাহলে আত্মসমর্পণ করে লাভ কী হলো? এখন আমার কিছু হলে এর দ্বায় রাষ্ট্রকে নিতে হবে। তিনি জোর দাবি করে বলেন এটি পরিকল্পিত ভাবে ঘটনার নাটক সাজিয়ে নিজেরাই করেছেন।
এদিকে ঘটনার পর নিহতের পরিবারের দাবি- এটি একটি পরিকল্পিত খুনের ঘটনা, এ ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদেরকে খুঁজে বের করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি তাদের।