নিখোঁজ গিয়াস উদ্দিন কুতুবজুম ইউনিয়নের ঘটিভাঙ্গা (১ নম্বর ওয়ার্ড) মধ্যপাড়া গ্রামের মৃত সাহাব মিয়ার ছেলে। সে স্থানীয় ব্যবসায়ি?মো. বাবুল এর মালিকানাধীন ট্রলারে মাছ ধরার জেলে (মাঝি) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
এ ঘটনায় নিখোঁজের ছোট ভাই জামাল উদ্দিন থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে গেলেও থানা পুলিশ তা জিডি হিসেবে গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ। নিখোঁজ জেলের কিছু ছেঁড়া কাপড় চোপড় পাওয়া গেছে।
এ প্রসঙ্গে মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাইছার হামিদ বলেন, 'এ বিষয়ে থানায় কোন জিডি হয়নি সেটা সত্য। তবে এ ঘটনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাচ্ছে। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা অভিযুক্তদের থানায় ডেকে জিজ্ঞেসাবাদ করতেছি। বিস্তারিত পরে জানাতে পারব।'
যদিও এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে
মহেশখালী থানায় ৬ জনের নামে একটি অভিযোগ (অবহিতকরণ) দেন নিখোঁজ জেলের ছোট ভাই জামাল উদ্দিন মাঝি।
অভিযুক্তরা হলেন-ঘটিভাঙ্গা এলাকার মৃত কালা মিয়ার ছেলে মো. বাবুল (৪২) ও মো. জাফর (৪৪), আশরাফ মিয়ার ছেলে নুরুল ইসলাম(৩৮), মো. লালুর ছেলে আব্দু সালাম (৩০), ওমর হাজীর ছেলে নুরুল কবির প্রকাশ হাইক্যা (৫২) ও কোরবান আলীর ছেলে আব্দুল মালেক (৪০)সহ অজ্ঞাত আরো ৪-৫ জন।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, নিখোঁজ গিয়াস উদ্দিন অভিযুক্ত বাবুল এর মালিকানাধীন মাছ ধরার ট্রলারে (ইঞ্জিন চালিত বোট) মাঝি হিসেবে ১,৩,৪,৫ ও ৬ নম্বর অভিযুক্তসহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের সাথে সাগরে মাছ ধরার কাজ করে আসছিলেন।
গত ১১ ডিসেম্বর সাগরে মাছ ধরতে যায় এবং যথারীতি সাগরে মাছ ধরার জন্য জাল ফেলে।
পরদিন ১২ ডিসেম্বর মাছ ধরার জন্য ব্যবহৃত বরশিতে আধার (খাদ্য উপাদান) না থাকায় কক্সবাজার ফিশারিঘাটে ফিরে আসেন। একই দিন মাছ ধরার উদ্দেশ্যে আবার সাগরে যান।
সন্ধ্যার পরপর সোনাদিয়া দ্বীপের অদূরে মগচরের পাশে সাগরে নোঙ্গর ফেলে খাওয়া-ওয়া করেন। এরমধ্যে ট্রলারে থাকা অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সাথে মাঝি গিয়াস উদ্দিনের কথা কাটাকাটি ও তর্কবিতর্ক হয়। পরে তারা খাওয়া-দাওয়া করে যে যার মতো ঘুমাতে যান। পরদিন ১৩ ডিসেম্বর ভোরে জানা যায় গিয়াস উদ্দিন আর মাছ ধরার ট্রলারে নেই।
এ খবর শোনে নিখোঁজ ব্যক্তির ছোট ভাই জামাল উদ্দিন মাঝি আরেকটি ট্রলার নিয়ে সাগরে বড় ভাইকে খুঁজতে যান। বাবুল কোম্পানির ট্রলারে থাকা জেলেদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা একেক সময় একেক ধরনের কাথাবার্তা বলে। তাদের কথা-বার্তা ও আচার আচরণ সন্দেহ হলে থানায় বিষয়টি জানান।
নিখোঁজ গিয়াস উদ্দিনের ভাই জামাল উদ্দিন জানান, 'আমার সন্দেহ হচ্ছে যেহেতু অভিযুক্তদের সাথে আমার ভাইয়ের তর্কবিতর্ক হয়েছে। তারা ঘুমের মধ্যে আমার ভাইকে খুন করার উদ্দেশ্যে আঘাত করে পরে মেরে সাগরে ফেলে দিতে পারে। এ ঘটনায় আমি প্রশাসনের সহযোগিতা চাই।'
ভুক্তভোগীর এসব তথ্য উপাত্ত স্বাধীন ভাবে যাচাই-বাছাই করা সম্ভব হয়নি। তবে অভিযোগ তদন্ত কর্মকর্তা মহেশখালী থানার এএসআই মো. ফরাজুল ইসলাম বলেন, 'বিষয়টি আমরা খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখতেছি। ইতিমধ্যে অভিযুক্ত পাঁচ জনকে থানায় ডেকে আনা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞেসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের কথার ভিত্তিতে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'