বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য কক্সবাজারের সন্তান সাবেক মন্ত্রী আলহাজ্ব সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের রাজনীতির মৃত্যু হয়েছে আর দাফন করা হয়েছে ভারতের দিল্লীতে। শেখ মুজিব ও হাসিনার আওয়ামী লীগ এদেশে আর রাজনীতি করার অধিকার নেই। তারা নিজেরা রাজনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। খুন, গুম আর দেশের গণতন্ত্র নষ্ট করে শেষ করে দিছে জনগণকে। হাসিনা এখন বিশ্ব খুনি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হোক সেটা সর্বদক্ষিণের মানুষ চাই। -
খবর সিবিএন এর।
তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে ইঙ্গিত করে বলেন, সংস্কার সংস্কার বলে সময় ক্ষেপন করবেন না। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করুন জনগণের বিরুদ্ধে যাবেন না। এখনো আমলা-পুলিশ প্রশাসনে ফ্যাসিস্টের যেসব দোসর রয়েছে তাদেরকে বিতাড়িত করেন। দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কার নির্বাচনী রােডম্যাপ প্রকাশ করুন।
তিনি লবণ শিল্পের কথা উল্লেখ করে বলেন, লবণ চাষীদের সাথে নিমক হারামী করবেন না। কক্সবাজারে উৎপাদিত লবণ দিয়ে পুরো দেশের মানুষ চলতে পারে। বিদেশ থেকে লবণ আমদানীর দরকার নেই। সাবেক মন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, ডিসেম্বরের আগেই দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন। কিছু উপদেষ্টা জনগণের পালস বুঝেনা। তাদের নসিহত করুন, অথবা বিদায় দিন। জনগণের বিরুদ্ধে যাবেন না। গণ অভ্যুত্থানের স্প্রিড অনুযায়ী নিত্য-পণ্যের মূল্যের উর্ধ্বগতি রোধ করুন, আইন শৃংখলা পরিস্থিতির উন্নতিতে নজর দিন। পতিত হাসিনার দোসরদের অস্থিরতার অপচেষ্টা শক্ত হাতে দমন করুন। তিনি বলেন, অনুপাত -অনুপাত নির্বাচন যারা চান, তাদের রাজনৈতিক অনুপাতের জ্ঞান নেই। স্থানীয় নির্বাচন রাজনৈতিক দলকে ক্ষমতায় বসায়না। এদেশের মানুষ বৈষম্যের বিরুদ্ধে রক্ত দিয়েছে। বৈষম্যহীন জ্ঞানলদ্ধ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য নির্বাচন কমিশনকে ছাত্র-জনতা ম্যান্ডেট দিয়ে ক্ষমতায় বসিয়েছে। এজন্য ভোট বিহীন এইদেশে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সুতরাং জাতীয় সংসদেই নির্ধারিত হবে গণতান্ত্রিক সংস্কারের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ও গণতন্ত্র রক্ষার সকল কর্ম।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারী) দুপুর ২ টায় কক্সবাজার গোল চত্বর মাঠে জেলা বিএনপি আয়োজিত বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি সহনীয় পর্যায়ে রাখা, অবনতিশীল আইন শৃংখলা পরিস্থিতির উন্নতি, দ্রুত গণতান্ত্রিক যাত্রাপথে উত্তরণের জন্য নির্বাচনী রোড়ম্যাপ ঘোষণা এবং রাষ্ট্রে পতিত ফ্যাসিবাদের নানা চক্রান্ত, অপচেষ্টা মোকাবেলাসহ বিভিন্ন জন দাবিতে সারা দেশব্যাপী কেন্দ্রীয় বিএনপি ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই বিশাল জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।
জনসভায় সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান পাকিস্তানের স্বপ্ন ধুলিস্যাত করে স্বৈরশাসক আইয়ুব খান রাজনৈতিক মৃত্যুবরণ করেন। আর ১৯৭৫ সালে একদলীয় শাসন বাকশাল কায়েমের মধ্য দিয়ে শেখ মুজিব নিজেই নিজের কবর রচনা করেন। তাঁর কন্যা শেখ হাসিনা ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগের কবর রচনা করে, আওয়ামীলীগের দাফন কার্য সম্পন্ন করে। এখন আওয়ামীলীগের মৃত্যু হয়েছে বাংলাদেশে, আর দাফন হয়েছে দিল্লীতে। মুর্দা হাসিনা কাফন পরে কথা বলছে দিল্লীতে বসে। পতিত ফ্যাসিবাদের প্রবক্তা হাসিনা নতুন বাংলাদেশে কাফন পরে কথা বলে অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। এদেশে মুর্দার কথা বলা জায়েজ নেই।
তিনি বলেন, আওয়ামীলীগ এবং গণতন্ত্র পরস্পর বিরোধী শব্দ। আওয়ামীলীগ তথা শেখ হাসিনা এদেশে রাজনীতি করেনি। করেছে-সংসদীয় একনায়ক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি খুন, গুম,লুটপাট। যার কারণে শেখ হাসিনা এখন জাতিসংঘ স্বীকৃত, বিশ্ব স্বীকৃত একজন খুনী।