ঘেরের নিয়মিত কর্মচারী মুহাম্মদ আরাফাত জানান, সোমবার (১৭ মার্চ) রাত ১১টার দিকে তিনি উত্তর নলবিলা বাজারে নাস্তা করতে যান। পরে বাড়ি গিয়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেওয়ার পর ঘেরে ফেরার পথে তিনি দেখতে পান, স্থানীয় এনামুল হকের নেতৃত্বে ৪-৫ জন ব্যক্তি ঘেরের দিক থেকে ফিরছেন। যখন তিনি মৎস ঘের ও লবণ মাঠে পৌঁছান, তখন দেখেন পুরো মাঠ পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
তিনি আরও জানান, ধারাদিয়া খাল ব্রিজ হয়ে আরও ৭-৮ জন লোক টর্চলাইট জ্বালিয়ে প্রধান সড়কের দিকে চলে যাচ্ছিলেন। এতে তার সন্দেহ হয়, রাতের অন্ধকারে পরিকল্পিতভাবে স্লুইস গেট খুলে দেওয়া হয়েছে, যার ফলে পুরো লবণ মাঠ তলিয়ে গেছে।
ঘের মালিক আনিসুল ইসলাম ছোটন অভিযোগ করেন, অভিযুক্ত এনামুল হকের সঙ্গে তাদের পূর্ব শত্রুতা রয়েছে। তিনি বলেন, "ইতোপূর্বে আমার পরিচালিত ঘের থেকে চাঁদা দাবি করেছিল সে। চাঁদা না দিলে ক্ষতি করার হুমকিও দিয়েছিল। আমি চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সে আমার সর্বনাশ করল।
তিনি আরও বলেন, "এতে প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এই ক্ষতি পোষাবে কে? আমি প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচার চাই। পাশাপাশি ক্ষতিপূরণ পেতে সহযোগিতা চাই। ইতোমধ্যে আমরা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিয়েছি।
এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। একাধিক ব্যক্তি জানান, দীর্ঘদিন ধরেই এনামুল হক ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় এক লবণচাষী বলেন, "এভাবে রাতের আঁধারে লবণ মাঠ তলিয়ে দেওয়া অমানবিক। লবণচাষিরা এমনিতেই জলবায়ু পরিবর্তন ও বাজার দরের চাপে কষ্টে আছেন, তার ওপর পরিকল্পিতভাবে ক্ষতি করা হলে তারা কীভাবে বাঁচবে?
আরেকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, 'এ ধরনের নিন্দনীয় কাজ যারা করেছে, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা উচিত। নয়তো ভবিষ্যতে অন্যরাও এ ধরনের কাজ করার সাহস পাবে।
ক্ষতিগ্রস্তরা প্রশাসনের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। স্থানীয়দের মতে, এ ধরনের ঘটনা পুনরায় যেন না ঘটে, সে জন্য কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী আনিসুল ইসলাম ছোটন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা এখন দেখার অপেক্ষা।